এবারের মত বিদায় আপনাকে ...

ছবিঃ ড. আনিসুজ্জামান
১৯৬৭ সালে একটি খবর ছাপা হয়, রবীন্দ্রনাথের গান পাকিস্তানের জাতীয় ভাবাদর্শ ও সংস্কৃতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ না তাই বেতার ও টেলিভিশন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয় রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্রচার হ্রাস করতে।

এর প্রতিবাদে সেই আইয়ুব খানের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েই আজকের জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান নামেন বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে বিবৃতিতে স্বাক্ষর সংগ্রহের অভিযানে। বিভিন্ন পত্রিকায় সেই বিবৃতিও তিনি নিজ উদ্যোগে ছাপাতে দেন।

১৯৭১সালে জাতীর গর্ভকালীন সময়টা'তে ভারতে গিয়ে বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে কাজ করেছিলেন। শুধু তাই না '৫২র ভাষা আন্দোলন থেকে '৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থান কোথায় নেই তিনি। পুরো ইতিহাসের সাথে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছেন তার লেখা 'বিপুলা পৃথিবী'র মতো। বাংলা ভাষা সাহিত্যের অন্যতম একজন রক্ষক ও পথপ্রদর্শক ছিলেন তিনি।

এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, 'সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা আমি দেখেছি এটি আমাকে এতোটাই প্রভাবিত করে যে আমার ভেতর যদি সামান্যতম সাম্প্রদায়িকতা'ও থেকে থাকতো তাও মরে যেতো'। সত্যিই তিনি সকল সাম্প্রদায়িকতার উর্ধে উঠে সকল অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়ে নিজেকে বাঙালী পরিচয়েই আলোকিত করেছেন।

বাংলা সাহিত্যের অনেক লেখক, লেখিকাকেও তিনি সাহিত্যের পথে প্রদক্ষিণ করিয়েছিলেন, নিজস্ব আলোকছটায়। তাই তো সেলিনা হোসেন এর মতোন একজন শক্তিমান লেখিকা নির্বিবাদে স্বীকার করেন "ওনিই আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিলেন লেখার জন্য...."

এবারের মতো বিদায়। তবে বাঙালী জাতির করোটি'তে, মেধা আর মনস্তত্ত্বে আপনি চির অম্লান হয়ে থাকবেন স্যার....

Post a Comment

0 Comments