নজরুল মানে একটা কাঁটাতার বিহীন পৃথিবী। না ধর্মীয় জালে, না রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলে আটকানো যায় না যাকে কিছুতেই। আসানসোলের রুটির কারিগর থেকে যাত্রাদলের নবীন সদস্য, বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক কিংবা কারাবন্দী বিপ্লবী। জীবনের প্রতি বাঁকে বাঁকে তার রোমাঞ্চকর যাত্রা।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, যার বহু স্মৃতির সাথে উজ্জ্বল হয়ে আছে চট্টগ্রামের নাম।
বিশ্বযুদ্ধে অংশ নিতে সৈনিকের প্রশিক্ষণ নেয়ার জন্য তিনি চট্টগ্রাম আসেন তৎকালীন হাটহাজারী ক্যাম্পে। এরপরও আরো কয়েকবার এসেছিলেন এখানে চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে তার পদচিহ্ন এঁকে করেছেন স্মৃতিবিজড়িত।
একবার রাউজানের ডেওয়া হাজীপাড়ায় রাউজান তরুণসংঘের আয়োজিত অনুষ্ঠানে কবিকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। কবিকে দেখতে তখন প্রচুর জমায়েত তৈরী হওয়াই আয়োজকদের শেষ পর্যন্ত টিকেট বানাতে হয়েছিলো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের জন্য। তখন তিনি দুইদিন ছিলেন রাউজানে।
এছাড়াও সন্দ্বীপ উপজেলাতেও তিনি গিয়েছিলেন, ওখানে স্থানীয় কার্গিল স্কুলের মাঠে কবিকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল। চট্টগ্রামের রিয়াজুদ্দীন বাজার, মুসলিম সোসাইটির স্কুল প্রাঙ্গণ, ডিসি হিল সহ বিভিন্ন এলাকা এখনো কবির স্মৃতি বয়ে বেড়ায় নীরবে।
তার বিখ্যাত কিছু কবিতা রচনাও হয়েছিলো এই চট্টগ্রামে। ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রামের ডিসি হিলে বসেই জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছিলেন তার পাঠক সমাদৃত জনপ্রিয় কবিতা, ‘বিদায়, হে মোর বাতায়ন...’।
"বিদায়, হে মোর বাতায়ন-পাশে নিশীথ জাগার সাথী!
ওগো বন্ধুরা, পান্ডুর হয়ে এল বিদায়ের রাতি!
আজ হ’তে হ’ল বন্ধ আমার জানালার ঝিলিমিলি,
আজ হ’তে হ’ল বন্ধ মোদের আলাপন নিরিবিলি’।"
শুভ জন্মজয়ন্তী কবি নজরুল....
0 Comments